টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার শোলাপ্রতিমা গ্রামের মোঃ হারুন অর রশিদ গত ৩ বছর পুর্বে ৩০ শতাংশ জমির মধ্যে মালটা চাষ করে সাফলতা লাভ করেছেন। ২য় বছর থেকেই তিনি ফলন পেয়েছেন। বিক্রি করছেন প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। এবার তার বাগানে গিয়ে যা দেখলাম, প্রচুর মালটা ধরেছে । একটা গাছে ৩০ থেকে ৪০ কেজি করে মালটা ধরেছে । আর মাত্র এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে মালটাগুলো পরিপক্ক হবে বলে জানান হারুন সাহেব। এবার তিনি ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন।
তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, চাকুরীর পিছনে না ঘুরে কেউ যদি ১ হাজার চারা লাগিয়ে পরিচর্চা করেন, তার আর অন্য কিছু করতে হবে না। তাই বলছি, আসুন আমার বাগান দেখুন এবং আমার মত মালটা চাষ করে দেশে ফলের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশি মালটাকে গুডবাই জানাই।
হারুন সাহেব ১৯৮৬ সন হতে নার্সারী ব্যবসা করে আসছেন। তিনি দীর্ঘ ৩৫ বছর যাবত সখিপুরের শোলা প্রতিমা তার নিজ গ্রামে বসত বাড়ির চর্তুদিকে প্রায় ১০ একর অন্যের জমি লিজ নিয়ে নার্সারী ব্যবসা করে আসছেন। তার কাছ থেকে জানতে পাললাম , তিনি প্রায় শতাধিক জাতের ফলজ ও বনজ চারা উৎপাদন করেন, তার এই চারা সখিপুর তথা আশ পাশের অন্যান্য উপজেলা থেকে চষিরা কিনে নিয়ে রোপন করছেন। মালটা চারা রয়েছে ১ লক্ষ এবং অন্যান্য চারার সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ মোট ২ লক্ষাধিক চারা তার নার্সারীতে রয়েছে। তিনি জানান তার ৮-১০ জন স্থায়ী শ্রমিক এবং প্রতিদিন ১০-১২ জন শ্রমিক কাজ করে থাকেন । তিনি এখান থেকে বছরে প্রায় ১০-১২ লক্ষ টাকা আয় করেন । তিনি নার্সারী করে স্বাবলম্বী হয়েছেন ।
সখিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ নুরুল ইসলাম সখিপুরে মালটা চাষের সম্ভাবনা নিয়ে বলেন, আমি সখিপুরে মালটা চাষ নিয়ে কাজ করেছি। সখিপুরে প্রচুর সম্ভবনা রয়েছে মালটা আবাদে । এটা বাংলাদেশ সরকারের “ লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন প্রকল্প” বাংলাদেশের ৩০টি জেলার ১২৩টি উপজেলায় এ প্রকল্প চালু রয়েছে। টাঙ্গাইল জেলায় সখিপুর, মির্জাপুর, ঘাটাইল ও মধুপুর উপজেলা এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। ৩ বছর হল তিনি সখিপুরে এসে প্রথম ২০১৯-২০ অর্থ বছরে – ১০৭টি, ২০২০-২১ র্অথ বছরে- ২১০ টি এবং ২০২১-২২ র্অথ বছরে ৩০টি এই মোট ৩৪৭টি বাগানে প্রায় ১০০ হেকটর জমিতে এবং আরো নিজের প্রেচেষ্টায় অনেক কৃষক মালটা চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে চাষ করছেন । কৃষি অফিসার বলেন, আমার জানা মতে সখিপুরে প্রায় ৫ শতাধিক চাষি মালটার চাষ করছেন ।
সখিপুর উপজেলা চেয়ারম্যান জুলফিকার হায়দার কামাল, ভাইস চেয়্যারম্যান শফিউল ইসলাম (কাজী বাদল) বহেড়াতৈল ইউ.পি. চেয়ারম্যান গোলাম ফেরদৌস, মহিলা কলেজের প্রফেসার মুরাদ আহম্মেদ, গজারিয়ার মুসলেম উদ্দিন সহ ৫ শতাধিক চাষি মালটা চাষে সখিপুরে সাড়া ফেলেছেন। কৃষি অফিসার নুরুল ইসলাম আরো বলেন, আমি আশা করছি আগামী বছর প্রায় ১০ হাজার মন মালটা সখিপুরে উৎপাদন হবে, তখন আর মালটা বিদেশ থেকে আমদানী করার কোন প্রয়োজন হবেনা কারণ সখিপুরের মালটা বিদেশি মালটার চেয়ে ঢেড় বেশি মিষ্টি। আমি এমন ভাবে কাজ করেছি যাতে বাংলাদেশের মধ্যে সখিপুর মালটা চাষে ১ নম্বরে থাকে ।