টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলা পরিষদ ফটক এলাকা থেকে চেচুয়া পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়ক ৯ মাস যাবত খুঁড়ে রেখেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অবনি এন্টারপ্রাইজ। এককোটি ৭২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এবছরের জানুয়ারি মাসে শুরু হওয়া সড়কটির কাজ শেষ হওয়ার কথা আগামী ডিসেম্বরে। কাজ পেয়ে শুধু খুঁড়ে রেখে আর কোনও কাজ না করায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কয়েক গ্রামের মানুষ। খুঁড়ে রাখা সড়ক দিয়ে অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি হেঁটে চলাচল করাও সমস্যা হচ্ছে।
সড়কটি দিয়ে উপজেলার সাতুটিয়া, নিশ্চিন্তপুর, সিলিমপুর, দয়থা, খরুল্লা, ইন্দুটি, লাঙ্গলজোড়া, মহিষজোড়া, রাণীহাটি, কেন্দুয়া, বলধি, মরাপুরা, বলিখন্ড, গোপালপুর, শিহরাইল, পৌজান, কালিবাড়ী, চেচুয়া, মুসুন্দি, এলেঙ্গা ও বালিয়াটা এলাকার মানুষের জেলা শহরে যাতায়াতের সহজ রাস্তা। সড়ক খুঁড়ে রাখায় এসকল এলাকার মানুষের পাশাপাশি সড়কের দুইপাশে দোকানপাটসহ ব্যবসায়ীদেরও সমস্যা হচ্ছে।
মহিষজোড়া গ্রামের আব্দুল কদ্দুস ও হাজী আঃ জলিল জানান, কয়েকটি ভাঙা ছাড়া আগে সড়কটি মোটামুটি ভালোই ছিল। নতুন করে কাজ করার জন্য ৯ মাস যাবত খুঁড়ে রেখেছে। আমরা বয়স্ক মানুষেরা সকালে হাটতে গেলেও খোঁয়ার সাথে হোঁচট খেতে হয়। সড়ক খুঁড়ে রাখায় অটো চালকেরা অন্য সড়কে গাড়ি চালায়, প্রতিটা স্ট্যান্ডে আগের চেয়ে ভাড়া বেশি দিতে হয়। মহিষজোড়া থেকে কালিহাতী অটো ভাড়া ছিল ২০ টাকা এখন ভাড়া ৩০ টাকা।
ভ্যানচালক নজরুল ইসলাম জানান, এসড়কে গাড়ি চালাতে ঝাঁকিতে আমাদের বুকে ব্যথা হয়ে যায়। যাত্রীরা বেশি ভাড়া দিতে চাইলেও অনেক সময় আমরা যাইতে চাইনা। এ অবস্থায় গাড়ি চালালে টায়ারসহ অন্যান্য পার্টস তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই রাস্তার দায়িত্বে যারা রয়েছে তাদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার অনুরোধ করছি।
দয়থা এলাকার কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সড়কটির পাশে কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নুরজাহান খসরু উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। এসকল বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে। সড়কের ধুলাবালি থেকে তারা ঠান্ডা-সর্দি ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে।
কেন্দুয়ার বাদল চন্দ্র দাস বলেন, উপজেলার পূর্ব-দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ অতি সহজেই এলেঙ্গা, কালিহাতী ও টাঙ্গাইলে যেতে পারতো। রাস্তা ভাঙার পরে গাড়ি ভাড়াও বেড়েছে চালকদের গাড়ি চালাতেও অসুবিধা হচ্ছে। অতিদ্রুত এ অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিকট সংস্কার কাজ সমাপ্ত করার দাবি জানাচ্ছি।
অবনি এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী হেকমত জানান, পাথরে পানি উঠার কারণে কাজ করতে সময় লাগতেছে। তাড়াতাড়িই কাজ শুরু করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন বলেন, আমি নতুন এসেছি। সড়কটির কাজ দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ জানতে পারার সাথে সাথে নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের নিকট চিঠি পাঠিয়েছি কাজ বাতিল করার জন্য। এছাড়া অবনি এন্টারপ্রাইজকে জরুরি ভিত্তিতে কাজ শেষ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে এক সপ্তাহ আগে। ঠিকাদার বলছেন খুব শীঘ্রই রাস্তা নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।