করোনা প্রতিরোধে লকডাউন তৃতীয় সপ্তাহের জন্য বাড়ানো হয়েছে। এরমধ্যে গত ২৫ এপ্রিল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেয়া হয়েছে দোকান-শপিং মল। তারপর থেকেই কেনাকাটার জন্য মার্কেটগুলোতে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। ঈদকে সামনে রেখে নতুন পোষাক কিনতে ছুটছেন মানুষ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খোলা ও ক্রেতাদেরও মুখে মাস্কসহ সামাজিক দূরত্ব মেনে কেনাকাটা করার কথা থাকলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা মানা হচ্ছে না।
টাঙ্গাইল শহরের ক্যাপসুল মার্কেট, টাঙ্গাইল প্লাজা, সমবায় সুপার মার্কেট, মাহমুদুল হাসান মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মার্কেটের দোকানগুলোতে ক্রেতার উপচে পড়া ভিড়। অধিকাংশ মার্কেটের প্রবেশপথে জীবাণুনাশক টানেল বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিংবা হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেই। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বসার মত যথেষ্ট জায়গাও নেই অনেক দোকানে।
ক্রেতাদের মধ্যেও অধিকাংশের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। অনেকে শিশুদের নিয়েও মার্কেটে এসেছেন। শারীরিক দূরত্ব না মেনে অবাধে তারা এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে ছুটছেন। টাঙ্গাইলের বাসাইল থেকে ঈদের কেনাকাটা করতে শহরের সমবায় সুপার মার্কেটে আসেন রোকসানা আক্তার। তার সাথে ছিল সাড়ে তিন বছরের এক কন্যাশিশু। ভিড়ের মধ্যেই শিশুকে তিনি আইসক্রিম কিনে দিয়েছেন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সময় মার্কেটে আসার কারন জানতে চাইলে রোকসানা আক্তার বলেন, আমার মাস্ক নেই, কথা বলবো না। মেয়ে কান্না করছিল তাই এসেছি। অপর এক ক্রেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, মাস্ক পরা উচিত ছিল। আসলে এখনই কেনাকাটা করাটা জরুরি ছিল না, কেন যে আসলাম। টাঙ্গাইল শহরের গৃহবধূ ইসরাত জাহান আশা বলেন, আত্মীয়স্বজনকে সব সময় উপহার দেয়া সম্ভব হয়না। ঈদ আসলেই উপহার দিতে হয়। একটু ভালো জিনিস দেখে না কিনলে কেমন হয়। তাই মার্কেটে এসেছি। অধিকাংশ দোকানদারের বক্তব্য, জায়গা সমস্যার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসার ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। তারপরও যতটুকু সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মানার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর কয়েকজন ক্রেতা একবারে দোকানে প্রবেশ করলে তাদেরতো বের করে দেয়া যায় না।
এদিকে মার্কেটে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কেনাকাটা অব্যাহত থাকলে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের। ক্রেতাদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মার্কেটে না আসার পরামর্শ তাদের। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের সাথে নিয়ে না আসারও অনুরোধ করেছেন চিকিৎসকরা। শিশু সার্জারী বিশেষজ্ঞ ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, মার্কেটে শিশুদের নিয়ে আসায় তাদের করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকি বেশি। যতটা সম্ভব শিশুদের শপিংমল থেকে দূরে রাখা উচিত।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে টাঙ্গাইল চেম্বর অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া বড়মনি বলেন, করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে ক্রেতা ও বিক্রেতাকে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সরকারের নির্দেশনা মতো স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে সবাইকে।
এম/ইউ/এ