মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের কাদেরিয়া বাহিনীর হেডকোয়াটার্স এবং বেসামরিক সদর দপ্তর উদ্বোধন হয়েছিল ১৯৭১সালের ২৯ মে আজকের দিনে মহানন্দপুর। সেই দিনটি স্মরণে আজ মহানন্দপুর বিজয় স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় নানামুখী কর্মসুচীর আয়োজন করে। আজ সকালে বিজয় স্মৃতিতম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা জানিয়ে ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে দিবসের সুচনা করা হয়। এর পর বিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক,স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাগণ, এলাকার বিভিন্ন স্তরের জনসাধারণ,মহানন্দুপর বাজার বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দ মিলে র্যালি করার পর বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনাসভায় মহানন্দুপর বিজয় স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়য়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক এবং বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ সামছুল হক এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন-সখিপুর উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা এম.ও গণি,সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা এবং মহানন্দপুর বিজয় স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ কামরুল হাসান প্রমুখ।
সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন- ১৯৭১সালের এই দিনে মহানন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ফোরকানিয়া মাদ্রাসায় স্থাপিত হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধের হেড কোয়াটার ও বেসামরিক সদর দপ্তর। এখান থেকেই বঙ্গবীর আঃ কাদের ছিদ্দিকি বীরউত্তমের নেতৃত্বে যুদ্ধ পরিচালিত হত। টাঙ্গাইল ও পার্শের তিন জেলা ঢাকা,ময়মনসিংহ ও পাবনার বিস্তৃর্র্ণ এলাকায় কাদীরিয়া বাহিনীর বীরযোদ্ধারাদের একের পর এক অভিযানে পাকিস্তানী সৈন্যদের বিপযস্ত করে তুলেছিল। এ অঞ্চলে কোন যুদ্ধেই পরাজিত হননি তারা। প্রায় ৩ শতাধিক সম্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করার বিরল কৃতিত্ব রয়েছে কাদেরিয়া বাহিনীর। মুক্তিযোদ্ধের সময় এ বাহিনির ছিল নিজস্ব হাসপাতাল, জনসংযোগ বিভাগ, বেতার ও টেলিফোন যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ নানা কার্যক্রম। এখান থেকেই রনাঙ্গন পত্রিকা প্রকাশ করা হত। স্বাধীনতার ৫১ বছরে পদার্পণে মুক্তিযোদ্দারা মহানন্দপুর এসে তাদের অতীতের সেই একাত্তরের ভয়াবহ যুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন । দীর্ঘ এক-দেড় কিলোমিটার বিস্তৃর্র্ন এলাকা জুড়ে ছিল এই বাহিনীর কার্যক্রম। বীর মুক্তিযোদ্দা জামাল হোসেনের বাড়ী, সাহেব আলী মুন্সির বাড়ী, বীর মুক্তিযোদ্দা আঃ বাছেদের বাড়ী, আলহাজ ওমর আলী সরকারের বাড়ীসহ আরো অনেক বাড়ীতেই ছিল কাদেরিয়া বাহিনীর কার্য়ক্রম। কোন বাড়ীতে হাসপাতাল, কোন বাড়ীতে জেলাখানা, কোন বাড়ীতে খাদ্য ও গোলাবারুদ মজুদ ছিল । যুদ্ধ করতে গিয়ে শহীদ হন এ বাহিনীর অনেক মুক্তিযোদ্ধা। আবার নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচেও যান অনেকে ।