টাঙ্গাইলে বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায়ের সময় সংঙ্গবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের ৪ জন সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-১২।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) তারিখে রাত আনুমানিক ২৩.৫০ ঘটিকার সময় একদল সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কোদালিয়ার পাকা রাস্তা হতে উপজেলার পশ্চিশ আকুর টাকুর পাড়ার মৃত-লুৎফুর রহমান খানের ছেলে ব্যবসায়ী মোঃ মশিউর রহমান খান মুরাদ’কে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এই বিষয়ে ভিকটিমের বড় ভাই টাঙ্গাইল র্যাব অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ প্রাপ্তির পর ভিকটিম উদ্ধার ও অপহরণকারীদের গ্রেফতারের জন্য র্যাব-১২, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইলের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন (জি), পিপিএম, বিএন এবং স্কোয়াড কমান্ডার এএসপি মোঃ এরশাদুর রহমান এর নেতৃত্বে টাঙ্গাইলের চৌকস আভিযানিক দল গোয়েন্দা তৎপরতা ও বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে। র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা ও অনুসন্ধান করে জানতে পারে যে, ভিকটিম ও অপহরণকারীরা টাঙ্গাইল জেলার সদর থানাধীন কালেক্টরেট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এন্ড কলেজ সংলগ্ন পশ্চিম পাশের জেলা সদর মাঠে অবস্থান করছে। অপহরণকারীরা ভিকটিমকে নিয়ে বিভিন্ন স্থান পরিবর্তন করে এবং ভিকটিমের পরিবারের সাথে মুক্তিপণের জন্য ২ লক্ষ টাকা দাবি করে।
আজ (১৫ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাতে র্যাবের আভিযানিক টিম টাঙ্গাইল সদরের কালেক্টরেট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এন্ড কলেজ সংলগ্ন পশ্চিম পাশে জেলা সদর মাঠে অভিযান পরিচালনা করে অপহরণ চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ১। ওয়াসীম খান (৪৫), পিতা- মজিদ খান, ২। মোঃ হাবিবুল কবির জনি (৪৮), পিতা- মৃত- আঃ ছালাম, ৩। মেহেদী হাসান শিশির (৩০), পিতা- মোঃ শাহজাহান ফারুক, সর্ব সাং- দেওলা, ৪। মোঃ জুয়েল (৩৫), পিতা- শফিকুল ইসলাম, সাং- কোদালিয়া, সর্ব থানা- টাঙ্গাইল সদর, জেলা- টাঙ্গাইলগণকে গ্রেফতার করে এবং ভিকটিমকে সুস্থ্য অবস্থায় উদ্ধার করে।
ভিকটিম আভিযানিক দলকে জানায় যে, অপহরণ চক্রের ৭/৮ জন সদস্য অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকে অনেক মারপিট করত এবং তার পরিবারের নিকট হতে মুক্তিপণের জন্য ২ লক্ষ টাকা ভিকটিমের মোবাইল দিয়ে দাবী করে।
র্যাব-১২, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইল এর কোম্পানী কমান্ডার এএসপি মোঃ কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, উদ্ধারকৃত ভিকটিমকে তারা গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে রাতে আনুমানিক ১১.৫০ মিনিটে আরও ৩/৪ জন সহযোগীসহ টাঙ্গাইল সদরের কোদালিয়া পাকা রাস্তা হতে ধারালো অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে গামছা দিয়ে মুখ ও চোখ বেধে জিম্মি করে মোটরসাইকেল যোগে অপহরণ করে টাঙ্গাইল সদর থানাধীন কালেক্টরেট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এন্ড কলেজ সংলগ্ন পশ্চিম পাশের জেলা সদর মাঠে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর ভিকটিমকে অনেক মারপিট করে এবং তার আত্তীয়-স্বজনের নিকট মুক্তিপণ হিসেবে ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা দাবি করে। পরবর্তীতে র্যাবের গোয়েন্দা টিম বিকাশের মাধ্যমে ফাঁদ পেতে অপহরণ চক্রের ০৪ সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এ অপহরণ চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ টাঙ্গাইল শহরে রাস্তায় চলাচলরত মানুষদের টার্গেট করে অপহরণ করত এবং অপহরণকৃতদেরকে অনেক মারপিট করত বলে আটককৃত অপহরণ চক্রের ০৪ জন সদস্য স্বীকার করে এবং মুক্তিপণ আদায়ের পর নির্জন এলাকায় অপহরণকৃতদের ছেড়ে দিত।
এই বিষয়ে ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। অন্যান্য আসামীদের আটক করার বিষয় প্রক্রিয়াধীন।