নিপুণ হাতে তৈরি করেন প্রতিমা।প্রতিমা তৈরি করায় যেনো তার নেশা।৭ বছর বয়স থেকে বাবার হাতে হাতেখড়ি হয় প্রতিমা তৈরির।৬৫ বছর ধরে তৈরি করেন বিভিন্ন দেব-দেবীর প্রতিমা।সময় যতই বেড়েছে তার হাতের কাজে সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে।মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করেন প্রতিমা।সারা বছরই ব্যস্ত থাকেন প্রতিমা তৈরিতে।প্রতিমা বিক্রির টাকা দিয়েই সংসার চলে তার ।বলছিলাম টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা সদর ইউনিয়নের রাশড়া গ্রামের প্রতিমা শিল্পী ভারত পালের কথা।
প্রতিমা শিল্পী ভারত পাল(৭২) উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাশড়া গ্রামের মৃত হরেন্দ্র পালের ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,ভারত পালের ঘরের ভিতর সাজিয়ে রেখেছেন প্রতিমা গুলো।সকাল থেকেই ভারত পালের বাড়িতে ভিড় করছেন ক্রেতারা।সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মনসা পূজার জন্য তৈরি করেছেন ৩৫টি প্রতিমা।রং তুলির কাজ শেষ করছেন।ভারত পাল ও তার স্ত্রী ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন টুকটাক কাজে।কোনো কোনো প্রতিমার রং ও চুল লাগিয়ে দিচ্ছেন তিনি।
প্রতিমা শিল্পী ভারত পাল বলেন, ছোট সময় থেকে বাবার হাতে হাতেখড়ি হয়।৬৫ বছর ধরে প্রতিমা তৈরি করি।প্রতিমা তৈরি করা আমার এখন নেশা।আমার বাবাও খুব ভালো প্রতিমা শিল্পী ছিলেন।সারা বছর ব্যস্ত থাকি প্রতিমা তৈরিতে।আমি মনসা দেবীর প্রতিমা তৈরি করেছি।৩৫টি মনসা দেবীর প্রতিমা তৈরি করেছি।খড়,রং,বাঁশ ও মাটির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিমার দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।প্রতিটি প্রতিমা ৫০০ থেকে ২০০০ হাজার টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে।প্রতিমা বিক্রির টাকা দিয়েই আমার সংসার চলে।প্রতিমা নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আমাদের বাড়িতে আসে।দাম ধরে মিলে গেলে ক্রেতারা নিয়ে যান।কেউ আবার আগেই অর্ডার দিয়ে রাখেন।লেখা পড়া করতে পারিনি আমাদের সময় স্কুল-কলেজ অনেক দূরে ছিল। সংসার চলতে চাইনি প্রতিমার কাজ করেই বাবা আমাদের ভাইবোনদের বড় করেছেন।বাড়িতে প্রতিমা তৈরি করলে আমার সাথে আমার স্ত্রী সাহায্যে করে।
প্রতিমা নিতে আসা প্রদীপ সরকার বলেন,আমরা ছোট সময় থেকে দেখতেছি ভারত কাকা প্রতিমা তৈরি করেন। আমার বাপ-দাদারাও কাকার কাছে থেকে প্রতিমা নিতেন।আমরাও প্রতি বছর যে কোনো অনুষ্ঠানে প্রতি নিয়ে থাকি।মনসা পূজা এইজন্য প্রতিমা নিতে এসেছি।
প্রতিমা নিতে আসা আনন্দ সরকার বলেন, তিনি অনেক সুন্দর করে প্রতিমা তৈরি করেন।আমি প্রতিমার অর্ডার দিয়েছিলাম।ভারত পালের বাড়িতে এসে মনসা দেবীর প্রতিমা নিয়ে গেলাম।বাড়ির পাশাপাশি হওয়ায় আগেই অর্ডার করে রেখেছিলাম।শুনেছি তিনি মনসা দেবীর প্রতিমা ৩৫টি তৈরি করেছেন।১২০০ টাকা দিয়ে মনসা দেবীর প্রতিমা কিনেছি।
দুলাল পাল বলেন, তিনি প্রতিমা তৈরি করেন অনেক দিন যাবত।আমাদের বাড়ির সাথেই ভারত দাদার বাড়ি।আমি সব সময় দেখি প্রতিমা তৈরি করতে ব্যস্ত থাকেন।বাসাইল উপজেলা ছাড়াও সখীপুর, মির্জাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা গুলোতে প্রতিমা তৈরি করে থাকেন।প্রতিমা তৈরিতে ভারত পালের সুনাম রয়েছে।তার হাতের কারুকাজ গুলো দেখার মতো।