জুলিও সিজার মোরা ও ওয়াল্ড্রামিনা যতদিন ধরে বিবাহিত জীবন পার করছেন, অনেক মানুষই ততদিন পৃথিবীতে বেঁচে থাকেন না।
বিস্ময়কর হলেও সত্যি, তাদের দাম্পত্য জীবনের বয়স প্রায় ৮০ বছর। জুলিও মোরার বয়স এখন ১১০ আর ওয়াল্ড্রামিনার ১০৫ বছর। বিশ্বের প্রবীণ দম্পতি হিসেবে তারা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের সার্টিফিকেট পেয়েছেন।
সিএনএন ও ফক্স নিউজের খবরে বলা হয়, ইকুয়েডরের এ দম্পতির যৌথ বয়স ২১৫ বছর। ১৯১০ সালের ১০ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন মোরা এবং ১৯১৫ সালের ১৬ অক্টোবর জন্ম নেন ওয়াল্ড্রামিনা।
১৯৪১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বোনের বিয়েতে ভগ্নিপতির কাজিন ওয়াল্ড্রামিনাকে দেখে ভালোবেসে ফেলেন মোরা। এর ৭ বছর পর বিয়ে করেন তারা।
যদিও সে সময় দুই পরিবার তাদের এ সম্পর্ককে মেনে নেয়নি। ফলে গোপনে একটি চার্চে গিয়ে বিয়ে করতে হয় তাদের। ওয়াল্ড্রামিনা বলেন, দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে বিবাহবিচ্ছেদের মতো কোনো কিছুর কথা আমরা কখনও চিন্তাও করিনি।
বর্তমানে ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটোতে বসবাস করছেন এ দম্পতি। তারা পেশায় শিক্ষক ছিলেন। তাদের ৪ সন্তান, ১১ নাতি-নাতনি রয়েছে। নাতি-নাতনি ও তাদের ঘরে সন্তান মিলিয়ে সদস্য ৩৩ জন।
চলতি বছরের শুরুতে তাদের নাতি-নাতনিরা মূলত প্রথম ভাবেন তাদের দাদা-দাদি সম্ভবত পৃথিবীর প্রবীণ দম্পতি। এরপর জুলিও-ওয়াল্ড্রামিনা দম্পতির মেয়ে সিসিলিয়া সব কাগজপত্র গিনেস ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠান। যাচাই-বাছাইয়ের পর আগস্টের মাঝামাঝি সময় গিনেস কর্তৃপক্ষ তাদের বিশ্বের প্রবীণ দম্পতির সার্টিফিকেট দেয়।
সিসিলিয়া বলেন, বাবা-মা এখনও শারীরিক-মানসিকভাবে সুস্থ রয়েছেন। কিন্তু মহামারীর কারণে পরিবার থেকে বাবা-মা আলাদা ছিলেন। আমাদের বড় পরিবার। এসময় তারা পরিবারকে খুব মিস করেছেন।
এ প্রবীণ দম্পতির পছন্দ-অপছন্দের কথা জানিয়ে সিসিলিয়া আরও বলেন, বাবা-মা একসঙ্গে সিনেমা দেখতে পছন্দ করেন। বাবা টেলিভিশন দেখা ও দুধ খেতে পছন্দ করেন।
আমার মা মিষ্টান্ন জাতীয় খাবার পছন্দ করেন। আর সংবাদপত্র পড়া উপভোগ করেন। দীর্ঘ জীবন পাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ওয়াল্ড্রামিনা বলেন, সত্য বল। মিথ্যা বল না, কারণ মিথ্যা বললে পৃথিবীটাই হারিয়ে ফেলবে।
গিনেস বুকের এক বিবৃতিতে ওই দম্পতি জানান, সব সদস্যের প্রতি ভালোবাসা, পারস্পরিক সম্মান, সততা ও শিক্ষাই পারে একটি পরিবারের সঠিক মূল্যবোধ ধরে রাখতে। বিয়ের শুরু থেকে আমাদের যে ভালোবাসা এবং ম্যাচিউরিটি ছিল তা একে অপরকে জানতে ও আবেগ নিয়ে পথ চলতে সাহায্য করেছে।
এর আগে বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ দম্পতি ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের অস্টিনের বাসিন্দা জন এবং শার্লটে হেন্ডারসন। তাদের দু’জনের যৌথ বয়স ছিল ২১২ বছর।
সূত্রঃদৈনিক যুগান্তর