টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বন্যাদূর্গতরা চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছে। এখনও লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে। অন্যদিকে, যমুনা নদীর পানি বাড়তে থাকায়, বিভিন্ন গ্রাম ও চরাঞ্চলে বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার, গো-খাদ্যের চরম
সংকট দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বিশেষ করে গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে অনেকেই। বন্যার্ত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার সংকট। ঘরে পানি উঠায় অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে উচুঁ বাঁধ ও সড়কের ওপর খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। অন্যদিকে ব্যাপক বৃষ্টিতে মানুষের ভোগান্তি বেড়ে গেছে বহুগুনে। বন্যার পানিতে গ্রামাঞ্চলের সড়কগুলো নষ্ট হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও নাজুক হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, যমুনা নদীতে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা গতকাল শনিবার বিকাল পর্যন্ত ছিল ৮৩ সেন্টিমিটার। নদীতে পানি বৃদ্ধি ও বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় নিম্নাঞ্চল ও মধ্যঞ্চলে পানি প্রবেশ করে লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। এতে ব্যাপক পরিমাণ জমির ফসল ও বীজতলা তলিয়ে গেছে। অন্যদিকে পানি বৃদ্ধি ও বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের কুঠিবয়ড়া এলাকায় ৫০ মিটার অংশে ফাটল ও একপাশে ডেবে
গেছে। এতে একদিন যান চলাচল বন্ধ থাকার পর সড়কটি সংস্কার করে পুণরায় যানচলাচল শুরু হয়েছে। এছাড়ও ওই ভূঞাপুর উপজেলার টেপিবাড়ী হতে নলীন পর্যন্ত সড়ক হুমকির মুখে রয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্যার পানি প্রবেশ করায় এক হাজার হেক্টর তিল, ১২শ হেক্টর আউশ ধান, ৫শ হেক্টর পাট, ৯শ হেক্টরবোনা আমন, ২৫ হেক্টর আমন বীজতলা, বিভিন্ন সবজি দেড়শ হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
টাঙ্গাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভূঞাপুর-তারাকান্দি হাসড়কটি রক্ষায় আমাদের লোকজন সার্বক্ষনিক তদারকি করছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. নাসরীন পারভীন জানান, ত্রাণ দেয়ার পাশাপাশি রান্না করা খাবার বানবাসীদের মাঝে প্রতিনিয়ত বিতরণ করা হচ্ছে। স্থানীয় সাংসদ ছোট মনির সার্বক্ষনিক ত্রাণ তৎপরতা তদারকি করছেন।