” মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য…পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনে কালজয়ী গানের কথাটি আবারো প্রমানিত হলো টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায়।
ঈদের দিনের আনন্দকে সবার মাঝে ভাগ করে নিতে ১৪ মে (শুক্রবার) বিকেলে বাসাইল উপজেলা পরিষদের আয়োজনে এবং উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বাসাইল শাখা ও পৌরসভার সহযোগিতায় ৩শত জন ধানকাটা শ্রমিকের মাঝে ঈদের দিনের উন্নত খাবার পরিবেশন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাসাইল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম, পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম আহমেদ , প্যানেল মেয়র বাবুল আহমেদ, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বাসাইল শাখার সাধারন সম্পাদক সাইদুল ইসলাম দিপু, যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক শরীফুজ্জামান, পৌর শাখার সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম মিয়া, সহ-সভাপতি গফুর মিয়া, বাসাইল ব্লাড ডোনেশন ক্লাবের সভাপতি শিশির আহমেদ সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
জানা যায়, বর্তমান ধানকাটা মৌসুমে বাসাইল উপজেলায় উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে বহুসংখ্যক ধানকাটা শ্রমিকের আগমন ঘটে। প্রতিবারের ন্যায় এবারেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ঈদুল ফিতরের আগের রাতে বাসাইল বাসস্ট্যান্ড চত্বর ও শহীদ মিনার চত্বরে কয়েক শতাধিক শ্রমিকের জমায়েত ঘটে। পরের দিন ঈদ হবার কারনে তাদের কোন কাজের ব্যবস্থা হয়নি। ফলে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার , হাসপাতাল, উপজেলা পরিষদ ভবন সহ বিভিন্ন স্থানে রাত্রিযাপন করেন। এবং ঈদের দিন সকালে তারা অনাহারে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জমায়েত হন।
বাসাইল প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা মুসলিম উদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের বাসাইল শাখার সাধারন সম্পাদক সাইদুল ইসলাম দিপু পৃথকভাবে অবস্থানরত ধানকাটা শ্রমিকদের দূর্দশার চিত্রটি ক্যামেরা বন্দী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ( ফেইসবুকে) পোষ্ট করেন এবং উপজেলা পরিষদ,উপজেলা প্রশাসন ও পৌরমেয়রের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
খুব অল্প সময়ের মধ্যে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি আমলে নেন।
তাৎক্ষণিক ভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম শ্রমিদের মাঝে উপস্থিত হয়ে
আমাদেরটাঙ্গাইল টোয়েন্টিফোর ডটকমের অনলাইন পোর্টালটির ফেইসবুক পেইজে লাইভের মাধ্যমে কাজী অলিদ ইসলাম ঘোষণা দেন উপজেলা পরিষদের আয়োজনে উপস্থিত সকল ধান কাটা শ্রমিকদের দুপুরে ঈদ উপলক্ষে বিরিয়ানি ও সেমাই খাওয়ানো হবে।
পরে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বাসাইল শাখার কয়েকজন দক্ষ সদস্যের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে যাবতীয় আয়োজন সম্পন্ন করে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপস্থিত ধানকাটা শ্রমিকের মাঝে রান্না করা বিরিয়ানি ও সেমাই পরিবেশন করা হয়।
রাজশাহী অঞ্চলের হতে আগত জামাল নামের একজন শ্রমিক বলেন, আমরা ঈদের দিনে কোন কাজ না পেয়ে যখন অনাহারে বসে ছিলাম তখন এমনি করে আমাদের খাবার ব্যবস্থা করায় আমরা সকলেই কৃতজ্ঞ।
উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম বলেন, পরিবার পরিজন ছেড়ে তারা আমাদের অঞ্চলে ধান কাটতে এসেছে। আজ ঈদের দিনে তাদের মুখে খাবার তুলে দিতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দতি। ফেইসবুকে খবরটি জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে পরামর্শ করে আমরা এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছি।
এর আগে সকালে পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম আহমেদের পক্ষ হতে বাসস্ট্যান্ডে অবস্থানরত শ্রমিকের মাঝে শুকনা খাবার সরবরাহ করা হয়।