এম এম হেলাল,কালিহাতী (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ আজ রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতীহীনভাবে ৪র্থ কালিহাতী পৌরসভা নির্বাচন ব্যালট পেপারের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ের পথে বাঁধা বিদ্রোহী প্রার্থী অপরদিকে অবাধ, সুষ্ঠু ভোট ও নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় আছে বিএনপি। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সকল প্রস্তুুতি গ্রহন করেছে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে প্রতি ওয়ার্ডে ১জন করে ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ১জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ২ প্লাটুন বিজিবি, ৬টি মোবাইল, ২টি স্ট্রাইকিং টিম সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা তানজিন অন্তরা।
মেয়র পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন নতুন প্রার্থী উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মোহাম্মদ নুরুন্নবী সরকার, নারিকেল গাছ প্রতীকে নিয়ে লড়ছেন স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী মোঃ হুমায়ুন খালিদ, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আলী আকবর জব্বার, হাত পাখা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন জামিল আল মামুন ও মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ হাসান হাসনাত (মিশু)। সাধারন আসনের কাউন্সিলর পদে ৯টি ওয়ার্ডে ৩৫ জন এবং সংরক্ষিত ৩টি আসনে ১০জন সহ সর্বমোট ৫০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। ১৯৯৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর ১৭টি গ্রাম নিয়ে গঠিত পৌরসভার ভোটার সংখ্যা ২৮ হাজার ৬৫৫ জন। ভোটাররা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে যোগ্য ও শান্তি প্রিয় ব্যক্তিকে পৌর পিতা নির্বাচিত করতে উৎসুক হয়ে রয়েছেন। “খ” শ্রেণীর এ পৌরসভাটি ১৯৯৮ সালের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পৌরসভায় রুপান্তরিত হয়। প্রায় দুই যুগেও নাগরিকরা সকল প্রকার নাগরিক সুবিধা এখনও পায়নি।
প্রচারণায় বাধাঁ, বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের ভীতি প্রদর্শন ও ভোটারদেরকে ভোট কেন্দ্রে যেতে নিরুৎসাহিত, হামলা, মারধর এমনকি তুলে নিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ করেছেন বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। পাশাপাশি ভোটের আগে বহিরাগত ও সন্ত্রাসীদের উপস্থিতিতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে কি না সে প্রশ্ন অনেকের।
যে পরিস্থিতিতে ভোটঃ আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে লড়ছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোহাম্মদ নুরুন্নবী সরকার। ৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার উপজেলা যুবলীগ আয়োজিত তাঁর নির্বাচনী পথসভায় উপজেলা আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্ধে এবং প্রতিহিংসায় হামলা ও লাঞ্চনার শিকার হোন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য জহিরুল হক জাকির। এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের জানান, রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় এমপির নির্দেশক্রমে তাঁর লালিত সন্ত্রাসী আজিজুল, মিনহাজ, রানা গং হত্যার উদ্দ্যেশ্যে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সম্মানিত নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এ হামলা চালায়। সাধারন ও সচেতন নাগরিকরা নিজেদেরই এরকম বিষয় নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন।
২০১৫ সালের ৩য় কালিহাতী পৌরসভা নির্বাচনে ৭হাজার ৪শত ৪৭ভোট পেয়ে ১হাজার ৯শত ৭২ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হোন আওয়ামীলীগ মনোনীত হেভিওয়েট প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আনছার আলী বি.কম, যেখানে একই প্রতীকে বিদ্রোহী মোঃ হুমায়ুন খালিদ পেয়েছিলেন ১হাজার ৬শত নয় ভোট, ৯হাজার ৪শত ১৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপি মনোনীত বর্তমান মেয়র আলী আকবর জব্বার।
কালিহাতী পৌরসভায় মূল ভোটের লড়াই হবে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে। নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন নতুন প্রার্থী উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মোহাম্মদ নুরুন্নবী সরকার, সাত মনোনয়ন প্রত্যাশীকে পেছনে ফেলে নৌকার মাঝি হয়েছেন তিনি। স্থানীয় সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খাঁনের আশীর্বাদ রয়েছে তার উপর।
ধানের শীষের প্রার্থী আলী আকবর জব্বার জানান, প্রচারণায় বাধাঁ, বাড়ি বাড়ি গিয়ে কর্মী-সমর্থকদের ভীতি প্রদর্শন ও ভোটারদেরকে ভোট কেন্দ্রে যেতে নিরুৎসাহিত, হামলা, মারধর এবং বিভিন্ন এলাকায় বহিরাগত লোকজন ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা অবস্থান নেওয়ায় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কিত। জনগণ ভোট দিতে পারলে তিনি জয়ী হবেন বলে বিশ্বাস করেন। তিনি অধুনালুপ্ত কালিহাতী সদর ইউপি চেয়ারম্যান, পৌর প্রশাসক ও দু’বারের নির্বাচিত মেয়র।
স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী হুমায়ুন খালিদ জানান, নতুন মানুষ আওয়ামীলীগের প্রার্থী হওয়ায় আমার নিজ এলাকাসহ পৌরবাসী এবার একজোট, সুষ্ঠু ভোট হলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক (বহিষ্কৃত) সদস্য। তিনি সৎ ও নিবেদিত মানুষ হিসেবে সুপরিচিত।